জাকির সিকদার সাভার (ঢাকা)স্টাফ রিপোর্টার : সাভারে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে একাধিক সিএনজি স্টেশন। সরকারি নিয়ম-নীতির প্রতি তোয়াক্কা না করে স্টেশনগুলি শিল্প প্রতিষ্ঠানের যানবাহন বোঝাই সিলিন্ডারে যত্রতত্র গ্যাস দিচ্ছে। এছাড়া অবৈধভাবে অনেকটা খোলা মেলাভাবে বিক্রয় হচ্ছে ডিজেল, অকটেন, পেট্রোল ও মবিল। অভিযোগ আছে প্রসাশনের কতিপয় অসাধু ব্যক্তিদের ম্যানেজ করেই চলছেন তারা। অভিযোগে জানা গেছে, সাভারে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডের নিকট জয়নাবাড়ীতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঘেঁষে মোল্লাহ সিএনজি ফিলিং স্টেশন বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ অন্যান্য যানবাহনে সিএনজি দেয়ার চেয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে গার্মেন্ট কারখানাগুলির কাভার্ড ভ্যান, লড়ি, পিকআপ ভ্যানযোগে আসা সিলিন্ডারে গ্যাস দিতে বেশী আগ্রহী। তারা দিন-রাত বিরতিহীনভাবে গার্মেন্ট, টেক্সটাইলস, নিটিং, কটন মিলসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের উৎপাদন খাতের প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস দিয়ে যাচ্ছে। আইনে আছে কেবলমাত্র যানবাহনে সিএনজি স্টেশনগুলি গ্যাস সরবরাহ করবে এবং দিনে ও রাতে সরকার নির্ধারিত সময়ে বিরতি দিয়ে গ্যাস প্রদান করবে। এ
প্রতিষ্ঠানটি উন্মুক্ত ভ্যানে যত্রতত্র গ্যাস সরবরাহ করছে সিরিয়ল অনুযাযী। কারণ তারা এককভাবে এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস দিচ্ছেন।
এজন্য তাদের স্টেশন থেকে গ্যাস নেয়ার জন্য সিলিন্ডারবাহী যানবাহন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। অন্যান্য সিএনজি প্রতিষ্ঠানগুলি প্রকাশ্যে যানবাহন ব্যতীত শিল্প কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। তাদের স্টেশন থেকে নিয়মিত সিলিন্ডারে ভর্তি করে নিচ্ছে আল মুসলিম গার্মেন্ট, আমান নিটিং, অনন্ত গ্রুপসহ প্রায় শতাধিক ছোট বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ আছে স্থানীয় প্রশাসন অন্যান্য সিএনজি স্টেশনগুলিকে শিল্প প্রতিষ্ঠানের ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লড়ি বোঝাই হয়ে আসা সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করতে বাধা প্রদান করছে। মোল্লাহ সিএনজি স্টেশনের এ্যকাউন্টস ও প্রসাশনিক ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম সেলিম জানান, উৎপাদনমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিতে আমরা গ্যাস সরবরাহ না করলে তাদের উৎপাদন ব্যাহত হবে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিএনজি স্টেশন গ্যাস না দিলে এলাকার কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে যাবে।
মোল্লাহ সিএনজি স্টেশন এককভাবে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে গ্যাস সরবরাহ করছে এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন কথাটি সত্য নয়। কারণ অন্যান্য সিএনজি স্টেশনগুলিও একইভাবে গ্যাস সরবরাহ করছে। তবে এ প্রতিবেদক সাভার এলাকার ৮টি সিএনজি স্টেশন ঘুরে দেখেছেন দিনের বেলায় সাভার এলাকার ২/৩টি সিএনজি স্টেশন সীমিত আকারে গ্যাস সরবরাহ করলেও মোল্লাহ সিএনজি স্টেশন পাইকারিভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠানের যানবাহনবাহী সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করছে। গতকাল প্রতিষ্ঠানটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে লুকিয়ে রাখা ও প্রকাশ্য সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করার দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণের পর প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা এ প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে।
এ ছাড়া একইভাবে সাভার পৌর এলাকার উলাইলে সাভার রিফুয়েলিং সিএনজি স্টেশন দেদারছে শিল্প
প্রতিষ্ঠানের যানবাহনযোগে আসা সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করছে। এ সিএনজি স্টেশনটিও একটির পর আরেকটি সিলিন্ডার বোঝাই যানবাহন অবৈধভাবে গ্যাস সরবরাহ করে যাচ্ছে। তবে এখানে তেমন লাইন নেই। অপরদিকে রাতের বেলায় ৯টার পর আবার কোনটি ১০টার পর কয়েকটি সিএনজি স্টেশন শিল্প প্রতিষ্ঠানের যানবাহন বোঝাই সিলিন্ডারে গ্যাস সরবরাহ করছে।
এছাড়া সিএনজি স্টেশনগুলি সরকারি নিয়ম-নীতির প্রতি তোয়াক্কা না করে বিক্রয় করছে সিএনজি, ডিজেল, অকটেন, পেট্রোল ও মবিল। খোলা বাজারে যত্রতত্র এ সকল তরল রাসায়নিক পদার্থ বিক্রয় মানব জীবনের জন্য অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক। তার মতে, প্রসাশনের উদাসীনতার অমানবিক। অবিলম্বে এ সকল দুর্নীতির বিরুদ্ধে সচেতন মহলকে রুখে দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি।